আজ একটা লেখা পড়লাম। এক মহিলা তার জীবনের কিছু ফেলে আসা অধ্যায় লিখেছেন। তার নাম উল্লেখ ছিল না লেখাটা তে। হয়ত ইটা আমাদের দেশের প্রায় সব মেয়েদের কথা বা দশা তাই তার নাম দেওয়া নেই।
তিনি লিখছেন :-
" ছোটবেলায় একটু বড় হবার পরেই বাবাকে বলতে শুনতাম এটা তোমার বাড়ি নয়। বিয়ে করে চলে যাবে তখন তুমি পর হয়ে যাবে আমাদের কাছে। তখন ভাবতাম তাহলে বিয়ের পরে আমার বাড়ি হবে একটা।
যথাসময়ে বিয়ে হল আমার। শ্বশুর বাড়ি গেলাম। সেখানে কিছুদিন পরেই আমার শ্বশুর কোনো কথায় রেগে গেলেই বলতেন এসব এখানে চলবে না ! এটা আমার বাড়ি। বুঝে গেলাম এতদিনেও এই বাড়ি টা আমার শাশুড়ি মায়ের হতে পারেনি তো আমার আর হবে কী করে !
আমার স্বামীর বদলির চাকরী। সে সুত্রে অন্যত্র যেতে সেখানে আমার গয়না বেচে নতুন ফ্ল্যাট কেনা হল। ভাবলাম যাক এতদিন বাদে আমি আমার বাড়ি পেলাম। আমার যেই কাজের মেয়েটি সেখানে কাজ করত তাকে আর তার বস্তির কয়েকজন মেয়েকে লেখাপড়া শেখাতে শুরু করলাম রোজ বিকেলে। আমার স্বামী জানতে পেরে প্রবল আপত্তি জানিয়ে বললেন আমার ফ্ল্যাটকে বস্তি বানানো বন্ধ কর। জোর ধাক্কা খেলাম !
এটাও তার মানে আমার বাড়ি নয় !
বন্ধ করে দিলাম পড়ানো। আজ তিনি নেই। আমার একমাত্র ছেলে দিল্লী তে চাকরী করে। স্ত্রী সন্তান নিয়ে সেখানেই আছে। আমাকে বলল মা এই ফ্ল্যাট তা পুরোন হয়ে গেছে , এটা বেচে দিয়ে তুমি আমার সাথে দিল্লী তে থাকবে চল।
কোথায় আমার বাড়ি ! প্রথম থেকে তো আজ অব্দি পেলাম না আমার সেই চির আকাঙ্খিত বাড়ি ! "
এই জীবন খাতার একরকম লেখা পৃষ্ঠা প্রায় প্রতিটি মেয়ের জীবন কাহিনী। প্রকৃত অর্থে আশ্রয় আর খুঁজে পাওয়া যায়না বা হয়না। .....